স্বদেশ ডেস্ক:
বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে পেঁয়াজ বাজারে আসেনি। চাষিদের মতে আরও একসপ্তাহ লাগবে পেঁয়াজ পুরোপুরি ঘরে তুলতে। এ সময়ে যদি ভারতীয় পেঁয়াজ আসে তা হলে ভালো দাম তো পাবেই না; বরং বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হতে পারে। পাবনার সুজানগর উপজেলার মধুপুর গ্রামের কৃষক মো. বাবুল হোসেন ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। তিনি জানান, প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগানো থেকে শুরু করে জমি থেকে উঠানো পর্যন্ত ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। পেঁয়াজ উঠানোর মৌসুমে সরকার পেঁয়াজ আমদানি না করলে কৃষকরা ভালো দাম পাবেন। এই সময় পেঁয়াজ আমদানি হলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
একই উপজেলার চরগোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক গোলজার হোসেন লাল জানান, বর্তমানে পেঁয়াজ উৎপাদনের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। ভালো দামের আশায় অনেক কৃষক পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি হলে কৃষকরা মারা যাবেন।
দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম জানান, এখন মূলকাটা পেঁয়াজ উঠানো শুরু হয়েছে এবং দানা বা চারা পেঁয়াজ লাগানো হচ্ছে। অনেক টাকা ব্যয় করে পেঁয়াজ আবাদ করে দাম কম পেলে কৃষকের মাথায় হাত পড়বে, সর্বনাশ হয়ে যাবে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক ওমর ফারুক বলেন, ভারত কখনো আগাম কিছু জানিয়ে রপ্তানি বন্ধ ও প্রত্যাহার করে না। এখন অনেক আমদানিকারকের পেঁয়াজ কনটেইনারে আটকা আছে। যেগুলো বেশি দামেই কেনা রয়েছে। এখন ভারতীয় পেঁয়াজ এলে ক্ষতির সম্মুখীন হবে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া দেশি চাষিরাও ক্ষতির মুখে পড়বেন।
ভারতে নতুন মৌসুমের পেঁয়াজ উঠতে শুরু করায় দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের পেঁয়াজ রপ্তানি নীতি সংশোধন করে রপ্তানি বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্য বৃদ্ধি ও মজুদ ঘাটতির কারণে গত ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানিতে ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। এই পরিস্থিতিতে গত বছরের মতো মিয়ানমার, পাকিস্তান, চীন, মিসর, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নানা রঙের ও স্বাদের পেঁয়াজ আমদানি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে সরকার।
পাশাপাশি ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।